সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঢাকঢোল পিটিয়ে উৎসবের আমেজ নিয়ে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। এ বছরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে ১৬৩ মন্দির- মন্ডপে পূজা হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্দির-মন্ডপে তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমা। মাটির প্রলেপ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এগুলো। কয় দিন পরেই রং-তুলির আঁচড়ে দৃষ্টিনন্দন করা হবে এসব প্রতিমার অবয়ব। উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের পঞ্চানন রায়ের ছেলে বীরগঞ্জ সরকারি কলেজে ছাত্র জিৎ রায় এবার তার এলাকার কুমারপুর ,বোয়ালমারী ও পৌরশহরের শিমূল তলা কলি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি কাজ করছে। জিৎ জানান,আমি সখের বসে প্রতিমা তৈরি কাজ করছি। এবছর তিনটি কাজে প্রায় ৭২ হাজার টাকা কনট্রাক হয়েছে। জিৎ আরও জানান,সে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে সংসার পরিচালনার দায়িত্ব তার ঘাড়ে পড়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে সৃজনে প্রতিমা তৈরি করেন এবং রং মিস্ত্রির কাজ করে সংসার পরিচালনা করছেন।
বীরগঞ্জ পৌরশহরের কলেজপাড়া এলাকার পুরোহিত সুনীল চক্রবর্তী বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যেদিয়ে দেবীপক্ষের শুভ সূচনা হবে। এ বছরের পঞ্জিকা মতে
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এ হচ্ছে দুর্গা দেবীর আগমনী বার্তা। এবার দেবী দুর্গা গর্জে আগমন করবেন এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে পালকীতে করে গমন করবেন।
এখন হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বী পূজারী ও ভক্তরা হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তৈরি করছেন দেবী দুর্গাকে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বীরগঞ্জ উপজেলার আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহেশ চন্দ্র রায় বলেন, আসন্ন দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি পূজা মন্দিরে স্থানীয় ভাবে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি যে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব গোপাল দেব শর্ম্মা জানান এবার উপজেলায় ১৬৩ টি পূজা মন্ডবে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে পৌরসভায় ৯টি,শিবরামপুর ইউনিয়নে ১৯টি, পলাশবাড়ী ইউনিয়নে ১৪টি,শতগ্রাম ইউনিয়নে ১২টি, পাল্টাপুর ইউনিয়নে ১৪টি, সুজালপুর ইউনিয়নে ১৫টি,নিজপাড়া ইউনিয়নে ৯টি,মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে ২১টি,
ভোগনগর ইউনিয়নে ৮টি,সাতোর ইউনিয়নে ২০টি, মোহনপুর ইউনিয়নে ৯টি ও মরিচা ইউনিয়নে ৯টি পূজা মন্ডপে পূজার আয়োজন শুরু হয়েছে।
বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল গফুর বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে সেজন্য প্রশাসনিক ভাবে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন পূজা কমিটির লোকজনের সাথে কথা বলেছি। পূজা চলাকালীন সময়ে সকল মন্ডপে নজরদারি সহ সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল টিম অব্যাহত থাকবে।
মতামত