শিক্ষাঙ্গন

দিনাজপুরে ৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৩ ঘন্টা রেলপথ ও সড়ক অবরোধ

প্রিন্ট
দিনাজপুরে ৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৩ ঘন্টা রেলপথ ও সড়ক অবরোধ

ছবি : শিক্ষার্থীদের রেলপথ ও সড়ক অবরোধ


প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিকাল ৪:৫৯

একমুখী প্রকৌশল শিক্ষাব্যবস্থা চালুসহ মেধার অপচয় রোধে প্রকৌশলীদের পেশা পরিবর্তন রোধ ও প্রকৌশল সংস্থায় প্রশাসনিক পদে প্রশাসনিক ক্যাডারের জনবল নিয়োগকরাসহ ৭ দফা দাবিতে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা রেলপথ ও সড়ক পথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে।
কর্মসূচী পালনের ফলে দিনাজপুর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ ৩ ঘন্টা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দাবি মেনে নেয়ার আল্টিমেটাম দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা দিনাজপুর শহরের ফুলবাড়ী রেলওয়ে গেট এলাকায় রেলওয়ে লাইন ও সড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা রেলওয়ে লাইনের উপর বসে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। নানানভাবে তাদেরকে ছোট করা হচ্ছে। এ সময় তারা প্রকৌশল সেক্টরে পেশাগত সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে গঠিত অসম কমিটি প্রত্যাখ্যান এবং ডিগ্রী প্রকৌশলীদের অযৌক্তিক তিন দফা দাবি রাষ্ট্রপক্ষ কতৃক প্রত্যাখ্যানের দাবিতে ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে বিক্ষোভ করে।
তাদের রেলপথ অবরোধের ফলে দিনাজপুর থেকে ঢাকা ও দিনাজপুর থেকে রাজশাহীগামী দুটি ট্রেন আটকা পড়ে। একইসাথে সড়ক অবরোধের কারণে দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া সাধারন মানুষ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা মোতায়েন ছিল।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা জানান, যারা কারিগরি শিক্ষা এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিক্ষার্থী সোলায়মান বলেন, আমাদের যে দাবি সেটি যৌক্তিক। আমাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আমরা বাধ্য হয়েছি এমন কর্মসূচী ঘোষণা করতে।
শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করে ছোট করা ও হত্যার হুমকী প্রদান করা হচ্ছে। যদি এই ঘটনায় সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহন করা না হয় তাদের আমাদের আন্দোলন কর্মসূচী অব্যাহত রাখা হবে।
শিক্ষার্থী জিনিয়া আক্তার বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হলে আগামীতে কেন্দ্র থেকে বা সিনিয়ররা বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচী দিবেন।
পরে কলেজ প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুর দেড়টায় তারা রেলপথ ও রাজপথ থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে গেলে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হলো- ০১. প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র ডেস্ক ও ফিল্ড ইন্জিনিয়ারিংয়ে বিভাজন করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ডেস্ক ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিয়োজিত করা এবং সরকারী প্রজ্ঞাপনের আলোকে ১০ম গ্রেড ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য নির্ধারিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী/সমমানের পদ সংরক্ষন করা, ০২. একমুখী প্রকৌশল শিক্ষাব্যবস্থা চালুসহ মেধার অপচয় রোধে প্রকৌশলীদের পেশা পরিবর্তন রোধ ও প্রকৌশল সংস্থায় প্রশাসনিক পদে প্রশাসনিক ক্যাডারের জনবল নিয়োগ করা, ০৩. উপ-সহকারী প্রকৌশলী/সমমানের পদ থেকে সহকারী প্রকৌশলী/সমমানের পদে পদোন্নতি ৫০ শতাংশে উন্নীত করা, ০৪. আর্ন্তজাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং টীম কনসেপ্ট অনুযায়ী সকল প্রকৌশল সংস্থার জনবল কাঠামোতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার-ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও দক্ষ জনবলের হার ১:৫:২৫ নির্ধারন করা, ০৫. পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনষ্টিটিউট এবং টিএসসিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ১:১২ অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ এবং ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কারিকুলাম ইংরেজি মাধ্যমে রুপান্তরসহ আধুনিকায়ন করা, ০৬. সকল প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সনদধারীদের ক্রেডিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি বৃদ্ধিকরন, অর্জিত ডিগ্রীকে বিএসসি (পাস)/সমমান ঘোষণা করা, ০৭. কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ কর্তৃক উত্থাপিত ৬ দফা দাবি অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা।