ছবি : বীরগঞ্জে চলছে আমন ধানের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় এখন পুরোদমে চলছে আমন ধানের চারা রোপণ ও পরিচর্যার কাজ। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জমিতে পর্যান্ত পানি জমেছে, যা চারা রোপণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। প্রকৃতির এই অনুকূল পরিবেশ কাজে লাগিয়ে কৃষকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ২৯ হাজার ৫শত ৭৮ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা আশা করছেন, এবার সময়মতো চারা রোপণ সম্পন্ন হলে এবং আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বাম্পার ফলন হবে। গত কয়েকদিন ধরে দিরাইয়ে ঝড়-বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করলেও কৃষকদের কর্মোদ্দীপনায় কোনো ভাটা পড়েনি।
নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষত্র গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, "জমিতে পানি না থাকলে তো চারা লাগানো যায় না। কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টি দিয়েছেন, তাই আমরা এখন দিনরাত কাজ করছি। আশা করি, ভালো ফলন হবে।"
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকদের উন্নত মানের বীজ, সার এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়া যেকোনো সমস্যায় কৃষকদের পাশে থাকার জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
বীরগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন কৃষকদের পদচারণায় মুখরিত। তাদের নিরলস পরিশ্রম ও প্রকৃতির সহায়তায় মাঠ এবারও সোনা রঙে ভরে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
এরই মধ্যে কৃষকরা জমি তৈরি, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপণের কাজ শুরু করেছেন পুরোদমে। অন্যদিকে কেউ কেউ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। ইতোমধ্যে ২১,৫০০ হেক্টরে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যে শতভাগ রোপণ সম্পন্ন হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোথাও ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ, কোথাও আগাছা পরিষ্কার , আবার কোথাও দলবদ্ধভাবে চারা রোপণ চলছে। দেশি ধানের পরিবর্তে কৃষকরা বেশি চাষ করছেন ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৫২, ব্রি-১০১ এবং দেশি সাদা মোটা, জিরা সহ হাইব্রিড জাত।
উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের কৃষক সতীশ চন্দ্র বর্মন বলেন, "আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আমন ধান রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।
কম খরচে অধিক উৎপাদন হওয়ায় অনেকেই আমন ধান চাষে ঝুঁকছেন। বৃষ্টি ভালো থাকায় এ বছর কোনো সেচের প্রয়োজন হয়নি।"
বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন,বীরগঞ্জ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বোরোধান আবাদ বাম্পা হয়েছে।
মতামত