ছবি : কৃষ্ণচূড়া - ছবি তুলেছেন বিকাশ ঘোষ
গ্রীষ্মকাল মানেই বাংলার পৃথিবীতে রঙের বিস্ফোরণ। সেই রঙিন উৎসবের প্রাণ ভোমরা যেন কৃষ্ণচূড়া ফুল। আর এই কৃষ্ণচূড়া জাদুতে মোড়ানো উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। সবুজ গাছগাছালির মধ্যে আগুন রাঙা কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে এনেছে ভিন্ন আমেজ। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে বৈশাখের আকাশে কৃষ্ণচূড়া তার রূপ মিলে ধরেছে। নিসর্গ প্রেমীরা এই ফুলের মুখ দেখে মুগ্ধ। পৌরশহরের সুইচ গেট এলাকা,পল্লী বিদ্যুৎ অফিস চত্বর,উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস চত্বর,উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিস চত্বরে কয়কটি কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখতে
মন কাড়ছে দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত ঢেপা নদের কোল ঘেষে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে সুইচ গেট। এই নদের ধার দিয়ে নতুন রুপে সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙিন ফুল। যাহা নদের পানির ঢেউয়ের সাথে তাল মেলিয়ে হেলিয়া দুলিয়া পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। আর এই কৃষ্ণচূড়া রঙিন ফুল ও নদের পানির ঢেউ এর তাল ও সুন্দর্য উপভোগ করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত পার্কে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। সুইচ গেট এলাকায়
বিকাল হলেই সাধারণ জনগণের সাথে সাথে প্রেমিক-প্রেমিকার জুটি এখানে হাজির হয়ে কৃষ্ণচূড়া লাল রঙিন টুকটুকে ফুলের সৌন্দর্য ও নদের ঢেউয়ের দৃশ্য দেখার সাথে সাথে তাদের দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে স্মার্ট ফোন ও ক্যামেরার মাধ্যমে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলে মনের ভাব প্রকাশ করছে। অপরদিকে প্রেমে ব্যর্থ হওয়া আবেগি মন নিয়ে অনেকে এখানে এসে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ্গিন টুক টুকে ফুলের দৃশ্য ও নদের পানির ঢেউয়ের সাথে সাথে ভারতীয় বাংলা কিশোর কুমারের সেই প্রিয় গান এই সেই কৃষ্ণচূড়া, যার তলে দাড়িযে চোখে চোখ হাতে হাত, কথা যেত হারিয়ে। আজ আশা নেই, ভালোবাসা নেই। তাদের নিজস্ব মোবাইলে এই গান শুনত শুনতে বিগত দিনের ফেলে আসা প্রেমিকের দেওয়া কথার কল্পনায় হারিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তাদের মাথার উপরে বৈশাখের বিকালে পড়িত বেলায় এলোমেলো হাওয়ায় দুলছিল সেই কৃষ্ণ চূড়ার লাল টুকটুকে ফুলের কলি। তখন এলোমেলো মন টা উৎফুল্ল হয়ে মোবাইলে কিশোর কুমারের গানের সাথে সাথে ঠোঁট মিলিয়ে কৃষ্ণচূড়া গানের মাঝে হারিয়ে যেতে দেখা যায় তাদেরকে। শুধু তাই নয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তার দু\'ধারে এ গাছগুলো দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এবং অনেক শ্রমজীবী মানুষগুলো তাদের ক্লান্তি দূর করার জন্য এখানে কৃষ্ণচূড়ার গাছের নিচে বসে মনটা রিফ্রেশ করতে দেখা যায়।
কথা হয় রিকশা চালক কুদ্দুস এর সাথে তিনি বলেন, আমরা সারাদিন পরিশ্রম করে এএলাকায় আসলেই এখানে এসে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে নদীর ঢেউ দেখতে দেখতে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে নেই। এখানে আসলে কৃষ্ণচূড়ার ফুলের মাঝে আমরা অনেক সময় পিছনের ফেলে আসা দিন ভাবতে ভাবতে হারিয়ে যাই।
পথচারী মকবুল হোসেন জানান, আসলে আমাদের এই মহাসড়কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা পরিষদ গেটে কৃষ্ণ চুড়া গাছের ফুল এলোমেলো হাওয়ায় যখন দোলে তখন সেই দৃশ্য আমাদের ক্যামেরা বন্দি করে রচখতে খুব ভালো লাগে। আমি এখানে অনেক সুযোগ পেলেই আসি। এখানে অন্য রকম স্বস্তি পাওয়া যায়। অনেক বিশাল আর সুন্দর এরিয়া। আর গ্রীষ্মে ফুলে ফুলে ভরপুর হয়ে যে রূপ ধারণ করে, তা সত্যি মোহময়।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা কবিরুল ইসলাম বলেন,বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পত্র-পল্লব নিয়ে চোখ ধাঁধানো লাল টকটকে উজ্জ্বল ফুলে বর্ণিল মায়াবি রূপের প্রকাশ ঘটাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া গাছ। আগের মতো তেমন কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো নেই। এই গাছগুলো মানুষের মনে অনেক প্রশান্তি এনে দেয়।
মতামত